1. nerobtuner@gmail.com : শ্যামল বাংলা : শ্যামল বাংলা
  2. info@shamolbangla.net : শ্যামল বাংলা : শ্যামল বাংলা
শ্রমিকের কষ্টের বেতন শ্রমিক নেতাদের ভেলকিবাজিতে আত্মসাৎ - দৈনিক শ্যামল বাংলা
বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ০৩:৪২ অপরাহ্ন

শ্রমিকের কষ্টের বেতন শ্রমিক নেতাদের ভেলকিবাজিতে আত্মসাৎ

বিশেষ প্রতিবেদক ঃ

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৫ মে, ২০২১
  • ১৬৮ বার

বেতন না দিয়ে দীর্ঘ একমাস বন্ধ থাকার পর সাভারের আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে বেতন পরিশোধ করেছেন আর এস এ্যাপারেলস নামে একটি কারখানা । শ্রমিকের কষ্টের বেতন নেতাদের আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।

দীর্ঘদিন আন্দোলনের মুখে পরার পড়ে কারখানার মালিক পক্ষ হতে শ্রমিকদের পাওনা বেতনের ৩ লাখ টাকা তাদের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও তা শ্রমিক নেতারা মাত্র ১ লাখ ৯ হাজার টাকা দিয়ে বাকী টাকা নেতারা ভাগাভাগি করে নেন। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এ প্রায় ২ লাখ টাকার আত্মসাৎ এর অভিযোগ করেছেন শ্রমিকরা।

শ্রমিক নেতাদের ভেলকিবাজির শিকার প্রতিনিয়ত হচ্ছে শ্রমিকরা দেখার কেউ নেই রক্ষকই যখন ভক্ষক। এধরণের ঘটনা নিত্যদিনের পুলিশ প্রশাসনও নিরব দর্শকের ভুমিকায় নির্বাক শ্রমিকরা।

৫মে বুধবার সকালে শ্রমিকদের অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান। এরআগেও গত ২৮ এপ্রিল শিল্প পুলিশ-১ পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ পত্র দায়ের করেন ভুক্তভোগী শ্রমিকগন।

উল্লেখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আর.এস অ্যাপারেলস চিত্রাশাইল আশুলিয়া এলাকায় অবস্থিত কারখানার বকেয়া বেতন না দিয়ে ৬ এপ্রিল কারখানা বন্ধ করে দেয় কতৃপক্ষ । তারই প্রেক্ষিতে পরে শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সহযােগিতা চাইলে তারা শিল্প পুলিশ কার্যালয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন শ্রমিকেরা।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৫ মে বুধবার শিল্প পুলিশ ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সহযােগিতায় বাংলাদেশ রেডিমেট গার্মেন্টস ও ওয়ার্কাস ফেডারেশনের সভাপতি জাহিদুর রহমান জীবন তার অফিসে বেতন দেওয়ার কথা বলে শ্রমিকদের আসতে বলে।

পরে কারখানার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শিল্প পুলিশ বকেয়া বেতন আদায় করে শ্রমিক নেতাদের কাছে ৩ লাখ টাকা বুঝিয়ে দেন।

উল্লেখিত পুলিশের বুঝিয়ে দেওয়া টাকা মর্ধ্য থেকে শ্রমিকদের মাঝে মাত্র ১ লাখ ৯ হাজার টাকা বন্টন করেন। আর বাকি ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন । যা শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।

অভিযোগকারী শ্রমিক অপারেটর ফাতেমা শ্যামল বাংলা’কে বলেন, বেতনের সব টাকা আমাদেরকে দেওয়ার জন্য (তিন লাখ) টাকাই কারখানা মালিক দিয়েছেন । কিন্তু বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শ্রমিক নেতা মামুন ও জীবন আমাদের টাকা কম কম দিয়ে বাকি টাকা মাইরা নিছে। আমরা কেউ কেউ মোটেও টাকা পায়নি। কেউ কেউ আবার দুই হাজার তিন হাজার করে পেয়েছে। যেখানে আমরা বেতন পেতাম ১০ হাজার টাকা সেখানে তারা দিছে ১৫০০ টাকা। আমগো অনেক শ্রমিক কান্নাকাটি করে চলেও গেছেন। আমি চাই আমাদের সঙ্গে প্রতারণার করার জন্য উপযুক্ত বিচার ও আমাদের সবার বেতনের টাকা ফেরত দেওয়া হোক। ঐদিন শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আবু হেলাল কারখানার সকল শ্রমিকের সমস্যা সমাধান করে নেন মালিকের কাছে এবং শ্রমিকদের টাকা পরিশোধও করে দেওয়ার জন্য ফেডারেশনের কাছে দ্বায়িত্ব বুঝিয়ে দেন তিনি। ’

এবিষয়ে আবু হেলালের কাছে জানতে চাইলে শ্যামল বাংলা’কে বলেন, আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এটার একটি তদন্ত হোক। আমি নিজে নিয়ে গিয়েছিলাম শ্রমিক নেতাদের কাছে ৩ লাখ টাকাও দিয়েছিলাম। তারপর নেতারা কি করেছে না করেছে তা আমি জানি না। আর আমি চলে যাচ্ছি আমার বদলি হয়ে গেছে। আমার নাম লিখে লাভ নেই আপনাদের ।

দুই শ্রমিক নেতারা টাকা ভাগাভাগির বিষয়টি নিয়ে দুই শ্রমিক নেতাই পাল্টা পাল্টি অভিযোগ করছেন। তবে জানাযায় কম বেশি আশুলিয়ায় অবস্থানরত ১১টি সংগঠন এই টাকার ভাগ পেয়েছে বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে। জাগো বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শ্রমিক নেতা মামুন বলেন, আমি টাকা দিয়ে এসেছি জীবন তার অফিসে শ্রমিকদের টাকা দিয়েছে। কারখানার মালিক আমার পরিচিত দেখে আমি গিয়েছিলাম। আমি কোনো টাকার ভাগ নেইনি।

জাহিদুর রহমান জীবন বাংলাদেশ রেডিমেট গার্মেন্টস ও ওয়ার্কাস ফেডারেশনের সভাপতি বলেন, আমি ১৬ হাজার টাকা খরচ করেছি মাত্র, আমি ৩০ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে পুলিশ আর মামুন পরে ১ লাখ ৯ হাজার টাকা শ্রমিকদের দিয়ে বাকি টাকা নিয়ে চলে যায়।

এ বিষয়ে আর.এস অ্যাপারেলসের অংশিদার (মালিক) কামাল বলেন, আমার কারখানার বড় ক্ষতি করেছে শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা। আমি শ্রমিকদের বলেছিলাম তোমরা ফেডারেশনের কথা শুনে যেও না, কারখানাটি বন্ধ করো না। আমি কয়েকটা দিন পর সব বকেয়া পরিশোধ করে দিবো। কিন্তু শ্রমিকদের নেতারা উস্কে দিয়ে কারখানা বন্ধ করিয়ে আমাদেরকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে নিয়েছেন, গত ২৫ তারিখ শ্রমিকদের সকল পাওনা ৩ লাখ টাকা শিল্প পুলিশের মাধ্যমে ফেডারেশনের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর ফেডারেশন শ্রমিকদের টাকা দিয়েছে কিনা আমি জানি না। শ্রমিক নেতারা আমাকে ফোন দিয়ে হুমকি দিছে বার বার। তাদের (শ্রমিকদের) সঙ্গে কথা বলতে বলছে বার বার।

এ বিষয়ে শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) আসাদুজ্জামান বলেন, অনেক ঘটনা নিয়েইতো আমার কাছে আসে। ঘটনাটি কয়েকদিন আগের। তবে আমি আপনার কাছ থেকে বিষয়টি আবারও জানলাম । পরবর্তীতে আপনাকে জানিয়ে দিবো।

নিউজটি শেয়ার করুন..

মন্তব্য করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2025 sweb.net
ডেভলপ ও কারিগরী সহায়তায় sweb.net