সফিকুল ইসলাম রিপন ঃ নরসিংদী
নরসিংদীর পলাশে কাউন্সিলরের ভাইয়ের ধর্ষণ মামলায় ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। বিবাদী পরিবারের দাবি, রাজনৈতিক ও পারিবারিক সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য প্রতিপক্ষ বাদীকে প্রভাবিত করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করিয়েছে। ঘটনার ১০ দিন পর মামলা হওয়ায় জনমনে এ ঘটনায় বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ঘোড়াশাল পৌরসভার বিএডিসি মোড়ের উত্তর পার্শ্বে (মেইন রোডে) খন্দকার মার্কেটের খন্দকার ফ্যাশনের সামনে পার্কিং করা প্রাইভেট কারের ভিতরে স্থানীয় কাউন্সিলর আলম খন্দকারের ছোট ভাই পাপ্পু খন্দকার ও তার সহযোগীর সহযোগীতায় তার ড্রাইভারের স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে পলাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়,
গত ০৮ নভেম্বর দায়েরকৃত মামলার এজহারে বাদী উল্লেখ করেন যে, স্বামী-স্ত্রী দুইজনকে ডেকে এনে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে গত ২৬ অক্টোবর গভীর রাতে প্রাইভেট কারের ভিতরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন বিবাদী পাপ্পু খন্দকার। গাড়িটি বিবাদী পাপ্পু খন্দকার তাহার নিজ দোকানের সামনে (মেইন রোডে) পাকিং করে রেখেছিলেন। ধর্ষণের আগে তিনি দোকানের ভিতরে নিয়ে অভিযুক্তকে চড় থাপ্পর মারেন। পাপ্পুর সহযোগী শাহাদাৎ এর সহযোগীতায় দোকানের শাটার বন্ধ করে দেয়া হয়। এবং এসময় ধর্ষণের অভিযোগ করা নারীর স্বামীকে আটকে রাখা হয়।
এজহারে বলা হয়, ধর্ষক নিজে গাড়ি চালিয়ে ভিকটিমকে বাড়ি পৌঁছে দেয় ।
ঘটনার ১০ দিন পর মামলা হওয়ার কারণে এজহারে প্রত্যক্ষ কোন স্বাক্ষী নেই। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএডিসি মোড়ের অবস্থিত খন্দকার মার্কেটের আশেপাশে কয়েকটি বহুতল বিপনী মার্কেট ও খন্দকার মার্কেট সহ এ এলাকায় মোট ১৮টি সি.সি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং বাজারে রয়েছে ৪জন নৈশ্য প্রহরী। জনবহুল এলাকা হওয়ায় এখানে রাত্র ২ টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মজীবি মানুষ চলাচল করে।
এ ঘটনার ব্যাপারে এলাকার বাসিন্দা হাসান আলী, রেজভী, অঞ্জুমান, আবুল হোসেন ও বাজার কমিটির সভাপতি ফরহাদ হোসেনসহ বাজার কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ জানান, এখানে অনেক দোকানদার রাত্র ২ টা পর্যন্ত দোকান খোলা রেখে দোকানদারী করে। ২৬ তারিখ রাতে গাড়িতে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় সিসি ক্যামেরায় এমন কোন ফুটেজ পাওয়া যায়নি।
খন্দকার মার্কেটসহ আশপাশের মার্কেটের নৈশপ্রহরী মোঃ সাজাহান, আঃ ছামাদ, মোঃ মমতাজ উদ্দীন, ফজলুুল হক জানান, আমরা সবাই ওইদিন এখানে ডিউটিতে ছিলাম। এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটতে দেখিনি।
স্থানীয় দোকানদার হামিদুর ষ্টোরের মালিক বিল্লালসহ একাধিক দোকানদার জানান, আমরা সকাল হতে রাত্র ২টা পর্যন্ত দোকান খোলা রেখে বেচাকেনা করি। এখানে ওই তারিখে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটতে দেখি নাই। ঘটলে আমরা দেখতাম ও জানতাম।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পাপ্পু খন্দকারের বড় ভাই কাউন্সিলর আলম খন্দকার জানান, প্রশাসনের অনেক লোক সিসি ক্যামেরা দেখেছে। এ ধরনের ঘটনার কোন ভিডিও ফুটেজ পায়নি।
তিনি আরো জানান, এলাকার অধিকাংশ লোক মনে করে মামলাটি মিথ্যা। আমার ভাই দোষী হলে আমিও তার উপযুক্ত বিচার চাই। আমি ন্যায় বিচার চাই। ড্রাইভার একজন নেশাখোর, জুয়াড়ি। সে প্রায় সময় গাড়ির ভাড়ার টাকার হিসাব দিতে পারতো না। টাকা বাজে পথে নষ্ট করে ফেলতো। তার নিকট গাড়ীর অনেক টাকা পাপ্পুর পাওনা ছিল। এ নিয়ে ঝগড়াঝাটি হয় অনেকবার। সে টাকা না দেওয়ার জন্য তার স্ত্রীকে দিয়ে মিথ্যা মামলাটি করিয়েছে। প্রকাশ থাকে যে , বাদীর এটি চতুর্থ স্বামী আপনারা বাদী সর্ম্পকে তথ্য নিয়ে জানুন সে কেমন?
তিনি আরো বলেন, সিসি ক্যামেরায় কোন ভিডিও ফুটেজ ধরা পড়েনি। মেইন রোডে ধর্ষণ কী করে সম্ভব? প্রত্যক্ষ কোন স্বাক্ষী নেই। আমি দাবি করি, এই মামলাটি একটি মিথ্যা ভুয়া ভিত্তিহীন মামলা। আমি সাংবাদিক ও প্রশাসনকে সত্য উদঘাটন করার অনুরোধ করছি। যেন সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসে