1. nerobtuner@gmail.com : শ্যামল বাংলা : শ্যামল বাংলা
  2. info@shamolbangla.net : শ্যামল বাংলা : শ্যামল বাংলা
সিলেটে লকডাউনে প্রস্তুত মেয়র আরিফ - দৈনিক শ্যামল বাংলা
বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ১২:৫০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:

সিলেটে লকডাউনে প্রস্তুত মেয়র আরিফ

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২০ জুন, ২০২০
  • ১৫৪ বার

মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার :
রোগ এবং রোগী, দু’টোই সিলেটে বেশি। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারাই বলছেন- সিলেটে করোনা সামাজিক ট্রান্সমিশন হয়ে গেছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। এতে করে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা সর্বত্রই। তিনহাজার ছুঁই ছুঁই করছে রোগীর সংখ্যা। ফলে করোনার লাগাম টেনে না ধরলে সিলেটে ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারে। কেউ মানছে না সামাজিক দূরত্ব। মাস্ক পরতেও অনীহা।

নগর যেন করোনা সংক্রমণের ঊর্বর ক্ষেত্র। এই অবস্থায় সিলেটের লকডাউন প্রয়োজন বলে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জোন ভাগ করে দু’দফা প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ঢাকা থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। এ কারণে সিলেটে লকডাউন কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রশাসনের ভয় অন্য জায়গা। সিলেটে লকডাউন কার্যকর নিয়ে। কারণ- এবারের লকডাউন হবে বাস্তবিক অর্থে লকডাউন। মানুষকে ঘরে বন্দি রাখা। এরপর করোনা আক্রান্ত রোগী খুঁজে খুঁজে আইসোলেডেট করা। ঘরে থাকা মানুষদের সব প্রয়োজন মেঠানো। খাদ্য, চিকিৎসা নিশ্চিত করা। কিন্তু সিলেটে লাল জোনের যে তালিকা করা হয়েছে সেটির আয়তন বেশি। আগে ছিলো সিলেটের উত্তর অংশে লকডাউন। এখন দক্ষিণ অংশের ২৭ নং ওয়ার্ডও রেড জোনের তালিকাভুক্ত হয়েছে। ফলে বলতে গেলে প্রায় গোটা নগরীকেই নিতে হবে লকডাউনে। এটি কীভাবে সম্ভব। কিংবা আদৌ সম্ভব কী না এ প্রশ্নের উত্তর মিলেনি। তবে- সিলেট নগরীর রেড জোনকে লকডাউনে প্রস্তুত সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। করোনার লাগাম টেনে ধরতে তিনি নিজেও চান লকডাউন। নিজে থেকে উদ্যোগী হয়ে গত এক সপ্তাহ আগে সিলেটের হকার ও হাসান মার্কেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এরপরও অনেক ব্যবসায়ী বারণ শুনেনি। তারা স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই দোকান খুলে বসেন। সিটি করপোরেশনও বসে থাকেনি। প্রতিদিন চালানো হচ্ছে অভিযান। স্বাস্থ্য বিধি না মানার কারণে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। সিলেটের জেলা প্রশাসনও বসে নেই। কঠোর হয়েছে তারাও। সিলেটে প্রতিদিনই সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলছে ম্যাজিস্ট্রেটদের অভিযান। হাইওয়ে, সিলেট নগরের সড়কপথ, কাঁচাবাজার, মাছবাজার সহ সবখানেই হচ্ছে অভিযান। জরিমানাও আদায় করা হচ্ছে। এরপরও লোকজনের চলাচলে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার কোনো বালাই নেই। সিলেটে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। গত ৮ দিনে রোগী বেড়েছে ৮শ’ জন। প্রতিদিনই সিলেটে রোগী সংখ্যার গ্রাফ বাড়ছে। এখন একশ’ রোগী প্রতিদিন তালিকায় নতুন করে যোগ হচ্ছে। কেউ বাদ যাচ্ছে না। বিশেষ করে ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। সিলেট জেলাতেই পুলিশ, ডাক্তার, সাংবাদিক মিলে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩০০। এই সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। সিলেট সিটি করপোরেশনেরও একাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী শ্যামল বাংলাকে জানিয়েছেন- ‘লকডাউনের জন্য আমরা প্রস্তুত। আমরা চাই মানুষ বাঁচাতে কার্যকর লকডাউন। একা মেয়রের পক্ষে সবকিছু করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতা প্রয়োজন পড়বে সবচেয়ে বেশি।’ তিনি বলেন- ‘লকডাউন বাস্তবায়ন করবে সিলেট সিটি করপোরেশন। এ কারণে সিটি করপোরেশনের সব কাউন্সিলর অফিসকে লকডাউনের জন্য এলাকাভিত্তিক অফিস করা হবে। এই অফিস থেকে সব কিছু মনিটরিং করা হবে। নেতৃত্বে থাকবেন এলাকার কাউন্সিলর। স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং স্বেচ্ছাসেবীদের সমন্বয়ে গঠন করা হবে কমিটি। এই কমিটির সদস্যরা ওয়ার্ড ভিত্তিক লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করবে। ঘরবন্দি থাকা মানুষের যখন যা প্রয়োজন সব কিছু দেয়া হবে। মানুষকে ঘরের বাইরে বের হতে দেয়া হবে না।’ তিনি জানান- ‘গত সপ্তাহে লকডাউনের জন্য এ কারণে আমরা দু’দিন সময় চেয়েছিলাম প্রস্তুতির জন্য। পরে প্রশাসনের তরফ থেকে কোনো কিছু জানানো হয়নি। তবে- আমরা বসে নেই। সব প্রস্তুতি চালাচ্ছি। এখন প্রশাসন থেকে লকডাউনের ঘোষণা দিলে আমরা পুরোদমে প্রস্তুত চালাবো।’ সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন- সিলেট নগরীর উত্তর অংশের ২৪টি ও দক্ষিন অংশের একটি ওয়ার্ডকে লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসার প্রস্তাব করা হয়েছে। উত্তর অংশে দেখা গেছে হাতে গোনা কয়েকটি এলাকায় রেড জোনে নেই। তবে- অধিকাংশই রেডজোনে। এ কারণে যে এলাকাগুলো রেড জোনে নেই সেগুলোতেও লকডাউন কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে করে কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়ও করোনা সংক্রমণ হবে না।’ এদিকে- সিলেট নগরের বাইরে তামাবিল সড়কের পার্শ্ববর্তী খাদিমপাড়া ইউনিয়নও পুরোটাই রেড জোনে। নগরীর পর রোগী বেশি ওই এলাকায়। ফলে রেড জোনের তালিকায় রাখা হয়েছে ওই ইউনিয়নকে। নগরের নিকটবর্তী হওয়ার কারণে একই সঙ্গে ওই ইউনিয়নও লকডাউনে যেতে পারে। এর বাইরে গোটা সিলেট জেলায়ই রোগী। কয়েকটি পৌরসভার অভ্যন্তরের এলাকা বেশি আক্রান্ত। জকিগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলায় রোগী বেশি। ফলে এ দুটি পৌরসভার একাংশ করে করে লকডাউন করা হতে পারে। স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন- জোন ভাগ করে প্রস্তাবনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছেন। এখন প্রয়োজন প্রশাসনিক অনুমতি। এই অনুমতি এলে সিলেটে লকডাউন কার্যকর শুরু হবে। লকডাউন কার্যকর একটি বড় কাজ। এজন্য সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনকে আগে থেকেই কর্ম পরিকল্পনা সাজাতে হবে। কারন- এই লকডাউন অকার্যকর হলে রোগী বাড়ার সংখ্যা কোনো ভাবেই কমানো সম্ভব হবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন..

মন্তব্য করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2025 sweb.net
ডেভলপ ও কারিগরী সহায়তায় sweb.net