ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আয়োজিত জেলা সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেছেন- সরকারের অযৌক্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেশের শিক্ষা খাতকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।
শুক্রবার ২৮ জানুয়ারি সকালে চট্টগ্রাম আল করিম অডিটোরিয়াম-এ ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম উত্তর উদ্যোগে শাখা সভাপতি হাবিবুল্লাহ মিছবাহ এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এইচ এম ওমর ফারুক এর সঞ্চালনায় ‘জেলা সম্মেলন-২০২২’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সংযোক্ত আরব আমিরাত কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি মাওলা শেখ মুহা. আজিজুল্লাহ উপর্যুক্ত উক্তিটি করেন। তিনি বলেন- যখন কুলষিত, তথাকথিত, আদর্শহীন ছাত্ররাজনীতিতে বিবেকবান ছাত্ররা আজ কুল-কিনারাহীণ জীবন পরিচালনা করছে, তখন আলোকবর্তীকা রূপে আবির্ভূত হয়েছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। জন্মলগ্ন থেকেই লাখো দিকহারা ছাত্রদের দেখাচ্ছে স্বচ্ছ আলোর দিশা। যা দেশে ত্রিধারার শিক্ষা ব্যবস্থার সমন্বয়ে গঠিত একটি ইসলামিক বিপ্লব।
জেলা সম্মেলনের প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ছাত্রনেতা মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম। তিনি বক্তব্যে বলেন- দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ আদর্শিক ছাত্র সংগঠন হলো ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। যা ১৯৯১ সালের ২৩ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন হযরত মাওলানা সৈয়দ ফজলুল করীম রহঃ। শিক্ষা যেকোনো জাতির মেরদন্ড। আর শিক্ষার্থীরা তার অংশীদার। তাই যতই শিক্ষা দেওয়া হোক না কেনো শিক্ষার্থীদের জীবন ইসলামবিধৌত না হলে সেই শিক্ষায় জাতির কোনো লাভ হবে না বরং বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। দেশের করোনা অতিমারির কারণে, হুটহাট করে সরকারের অযৌক্তিক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষনা দেশের শিক্ষা খাতকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে পৌঁছিয়েছে। প্রযুক্তিনির্ভর এই বিশ্বায়নের যুগে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। দেশের বেকারত্বের অবসানে শিক্ষার্থীদের কারিগরি সহায়তায় গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে দেশের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুবিধা পাওয়া যাবে না। দেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টিতে ও সকল জুলুম, অত্যাচার, নিপীড়নের প্রতিবাদে ছাত্র সমাজ অতীতেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এবং বর্তমানেও এই ছাত্র জাহেলি, ঘুণে ধরা সমাজকে পরিবর্তন করে ইসলামভিত্তিক, সুন্দর, সুখী, সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে এগিয়ে আসতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে।
সম্মেলনের সভাপতি হাবিবুল্লাহ মিছবাহ তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে ছাত্রদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন- দেশের তরুণ শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ আজ বিদ্যাপীঠে যেতে না পারায় তারা মাদক, চাঁদাবাজি, কিশোর গ্যাং সহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। মোবাইল গেইমিং সহ তারা মিশে যাচ্ছে বিভিন্ন অপসংস্কৃতিতে। তাদেরকে এই বিপদগামীতা দেশে করুণ পরিনতি ডেকে আনবে। তাই তাদের সুপথে ফিরিয়ে আনতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কান্ডারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি অতীতে যেভাবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ছাত্রদের ন্যায্য দাবির পক্ষে সোচ্চার ছিলো তেমনি আগামিতেও সকল ছাত্রদের নিয়ে একত্রে আন্দোলন সংগ্রামে একসাথে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে সকলকে এই সংগঠনে যুক্ত হয়ে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে কাজ করার উদাত্ত আহবান জানান।
কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে ২০২২ সেশনের জন্য নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করেন।
সভাপতি- মু. তানভির মাহতাব সহ-সভাপতি- মু. শাহাদত হোসাইন আমিনী, সাধারণ সম্পাদক- এইচ এম ওমর ফারুক
সম্মেলনে অতিথি ছিলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুয়েত কেন্দ্রিয় কমিটির সেক্রেটারি সৈয়দ জামাল সাহেব ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সহ-সভাপতি আতিকুল্লাহ বাবুনগরী, সেক্রেটারি ইঞ্জিনার মো. রফিক, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা এহসান উল্লাহ চৌধুরী, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি মাওলানা আব্দুল আলি কারিমী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভাপতি- মাওলানা মতিউল্লাহ নূরী।
ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব ফোরকান শিকদার, সাবেক সভাপতি প্রভাষক এমদাদুল্লাহ চৌধুরী, ইসলামী আন্দোন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক, ইসলামী যুব আন্দোলন চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাধারন সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সহ-সভাপতি তানভীর মাহতাব, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত হোসাইন সহ অন্যান্য জেলা দায়িত্বশীলবৃন্দ ও থানা নেতৃবৃন্দ।