ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল
নিজস্ব প্রতিবেদক :
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সারাদেশজুড়ে সংঘটিত ‘জুলাই গণহত্যা’ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান অভিযুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
আজ রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এ সময় অন্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সরকার যে দমন-পীড়ন চালায়, তার মূল নির্দেশদাতা ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রায় দেড় হাজার আন্দোলনকারী নিহত হন। আহত হন সহস্রাধিক মানুষ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিকল্পিত এই অভিযানে গণহত্যা সংঘটিত হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গত ১২ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্তে শেখ হাসিনাকে ‘জুলাই গণহত্যা’র প্রধান নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই সময়সীমা নির্ধারণ করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।
এরও আগে, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর পৃথক দুটি মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করতে দুই মাস সময় বেঁধে দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো হয়, যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। এই দমনপীড়ন এবং হত্যাকাণ্ডের পেছনে নেতৃত্ব দেন তৎকালীন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আন্দোলন দমনে নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যবহার করে যে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালানো হয়, তা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে তদন্ত সংস্থা।
বর্তমানে এই মামলার বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।