মিঠাপুকুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পিইডিপি-৪ এর আওতায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে প্রাথমিক বিদ্যালয় মেরামত ও সংস্কার (মাইনর ক্যাটাগরি) কাজের জন্য প্রায় দু’লক্ষ টাকা করে উপজেলার ৭৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়। উপজেলা প্রকৌশলী প্রদত্ত এস্টিমেট অনুযায়ী কাজ করার বিধান থাকলেও শুধু মাত্র হালকা পাতলা রং করেই কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আর প্রধান শিক্ষক বরাদ্দের টাকা আত্মসাত করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতি দ্বন্দ্বের জেরে বিদ্যালয়গুলোর কাজের মান নিয়ে উভয়ই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবং উপজেলা প্রকৌশলী বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিভাবক এবং সচেতন মহলের ও রয়েছে নানান ক্ষোভ।

এদিকে উপজেলার অভিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ছুটি হয়েছে। বিদ্যালয়ের পূরাতন ভবনের সামনে বসে কয়েকজন তাস খেলছেন। সংবাদকর্মীদের দেখা মাত্র তারা সবাই একযোগে এসে জানালেন এখানে কোন কাজ হয়নাই। বিদ্যালয়ের দেয়ালের সামনে এবং পিছনের অংশ দেখিয়ে তারা জানালেন সামনে কোন ধরনের ঘষামাজা ব্রাশ না করে প্রধান শিক্ষক নিজ হাতে এই রঙ্গ টুকু করেছেন। পঁচা মিয়া নামে একজন যুবক জানান, বায়জীদ আহমেদ এখানের প্রধান শিক্ষক আর তার স্ত্রী তাহমিনা বেগম সহকারী শিক্ষক, এখন বোঝছেন তো স্বামী স্ত্রী বাচ্চাদের কেমন ক্লাশ নেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক জানান, স্কুলটির লেখাপড়ার স্বার্থে স্বামী অথবা স্ত্রী যেকোনো একজনকে বদলি করা প্রয়োজন।

অভিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ওবেদ আলী মিয়া জানান, আমাকে সভাপতি হিসেবে প্রধান শিক্ষক হিসাব করেনা। আমি তাহার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েছি। নিজস্ব লোক বলে কিছু বলিনা।

অভিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বায়জীদ আহমেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি জানান, ডিআইজি আমার বন্ধু, এসআই আমার ভাই, এখনে আপনাকে ফোন দিবে। আমার সম্পর্কে অভিযোগ করার সাহস যারা দেখিয়েছে তাদের শায়েস্তা করেছি। আমার কাছে এসবের হিসাব নেই। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, আপনার অবস্থা এখনে খারাপ করবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এমনিতে বরাদ্দ দেয়নাই। দু’লক্ষ টাকার মধ্যে ভ্যাট-ট্যাক্স বাদ দিয়ে একলক্ষ চব্বিশ হাজার টাকা মাত্র আমি পাবো। শেষে নিজেকে একটি ইউটিউব চ্যানেল এবং নিউজ প্রোর্টালের কথিত মালিক দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রকৌশলী আখতারুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঐ শিক্ষকের বিষয়ে স্কুলটির সভাপতি নিজেও একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।এস্টিমেট অনুযায়ী কাজ না করলে বিল বন্ধ করে দেয়া হবে। তিনি জানান, টাকা পয়সা দিয়ে বরাদ্দ নিয়েছেন এমনটা হয়তোবা নয়, সহকারী ইঞ্জিনিয়ার গেলে হয়তোবা তারা সামান্য চা-কফি খাওয়াতে পারেন। বাকীটা আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, আনোয়ারুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার অফিসে একাধিকবার গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।