নিজস্ব প্রতিবেদক :
এক পুলিশ মু্িক্তযোদ্ধার মেয়ের পরিবারের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন ফরচুন শপিংমলের কয়েকটি দোকান দখল করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া শপিং মলের সঙ্গে থাকা আবাসিক ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের শিশুদের খেলার জায়গাসহ প্রায় ছয় হাজার বর্গফুট জায়গা দখল করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা পরিচয়দানকারী আবুল হোসেন ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে। যদিও এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মনগড়া বলে দাবি করেছেন আবুল হোসেন।

রমনা থানায় করা এক জিডিতে মুক্তিযোদ্ধা আমীর হোসেনের মেয়ে রোকসানা আক্তার পলি অভিযোগ করেন, তিনি অবসরপ্রাপ্ত পুলিশের হেড কনস্টেবল বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেনের মেয়ে। তার স্বামী নাসিরউদ্দিন দুলাল। তাদের দুইটি সন্তান আছে। অনেক কষ্টে টাকা জমিয়ে তারা ফরচুন শপিং মলে আটটি দোকান কেনেন। তারা পরিবার নিয়ে ফরচুন শপিং মলের ওপরের একটি এপার্টমেন্টে বসবাস করে। তাদের সংসার চলে দোকানের ভাড়া দিয়ে। এটিই তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।

২০১৮ সালে আবুল হোসেন তার দলবল নিয়ে তাদের দোকানগুলো দখল করে নেয়। দখলকারীরা তার স্বামীকে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। গ্রেফতার হওয়ার ভয় দেখিয়ে তার স্বামীকে বাসা থেকে বিতাড়িত করতে বাধ্য করেছে। প্রায় এক বছর ধরে দুইটি সন্তান নিয়ে তিনি চরম ভয়ের মধ্যে বসবাস করছেন। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে তিনি সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে ফরচুন ফাউন্ডেশন লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজার কামরুল আরিফের করা অভিযোগে বলা হয়, আবুল হোসেন ও তার দুই ছেলে আবির হোসেন এবং নিবিড় হোসেন তাদের নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ফরচুন শপিং মলটির ৮টি ফ্ল্যাট, ২৪টি দোকান, ভবনের ষষ্ঠ তলায় থাকা শিশুদের খেলার জায়গা, ওয়েস্টার্ন পার্ক ও ফুড কোর্টসহ ৬ হাজার বর্গফুট জায়গা দখল করে নিয়েছেন। দোকানগুলোর মালিকদের হুমকির মুখে উচ্ছেদ করেছেন। দোকানগুলো ভাড়া দিয়ে সেইসব টাকা জোরপূর্বক আদায় করে নিচ্ছেন। ৬৬টি ফ্ল্যাটের চলাচলে জায়গা দখর করে দোকান বসিয়ে দখল করে রাখে। এ ব্যাপারে উপরোক্ত সব অভিযোগ ব্যবসায়ী ও ফ্ল্যাট মালিকরা ২০১৭ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। অপরুন্তু তাদের উপর নেমে আসে আবুল হোসেন ও তার দুই পুত্রে অত্যাচারের খড়গ।

সরকারী দলের প্রভাবশালী নেতা পরিচয়ে ফরচুন শপিং মলসহ আশপাশের ফুটপাথের দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা নিচ্ছেন দখলকারীরা। ২০১৭ সাল থেকে এভাবেই আবুল হোসেন ও তার লোকজন এমন দখল বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, আবুল হোসেন ও তার লোকজন পাশেই এম প্লাজার পঞ্চম তলায় সৈনিক ক্লাবে নিয়মিত জুয়া, ক্যাসিনো ও মাদকের আসর বসাত। প্রসঙ্গত সম্প্রতি ক্যাসিনোবিরোধী র‌্যাবের অভিযানে ক্লাবটি সিলগালা করে দেয়ার ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে আবুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, এসব অভিযোগ মনগড়া ও ভিত্তিহীন। শিশুদের খেলার জায়গা সম্মিলিতভাবে বিক্রি করে দিয়েছেন এপার্টমেন্টের বাসিন্দারা।